কনটেন্ট রাইটিং কি? কনটেন্ট রাইটারদের যোগ্যতা এবং ভালো কনটেন্ট তৈরির উপায়?

টিআইবিঃ বর্তমানে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, কর্মজীবী বা গৃহিণী, অনেকেই শখের বশে লেখালেখি করতে পছন্দ করেন। কিন্তু আপনার লেখার মান ভালো হলে এই শখের কাজ থেকেই আয় করা সম্ভব। তাছাড়া আপনার লেখা প্রিন্ট মাধ্যম বা অনলাইনে প্রকাশিত হলে আপনি সবার কাছ থেকে পাবেন বাড়তি কদর।
টেকনো ইনফো বিডি‘র প্রিয় পাঠক: প্রযুক্তি, ব্যাংকিং ও চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরের আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ টেকনো ইনফো বিডি তে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন। |
অফলাইন ও অনলাইন দুইভাবেই কনটেন্ট রাইটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের জন্য আর্টিকেল লিখে অফলাইনে আয় করা যায়। আর অনলাইনে আয় করতে আপওয়ার্ক, ফিভার, ফ্রিল্যান্সারসহ অন্যান্য অনলাইন মার্কেট প্লেসে নিবন্ধন করে খুঁজে নিতে হবে নিজের পছন্দের লেখালেখির কাজটি।
কনটেন্ট রাইটিং কি?
কনটেন্ট রাইটিং হল এমন এক ধরণের রাইট আপ যা কোন ওয়েবসাইট বা পেজ বা কোন পণ্য বা বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করে। অনেক একে আর্টিকেল রাইটিংও বলে থাকে। যেমন, আপনি যদি ইন্টারনেটে কোন প্রোডাক্ট বা কোন বিষয় নিয়ে সার্চ করেন তাহলে ফলাফল হিসেবে যে বিবরণগুলো পান সেগুলোই হল কনটেন্ট।
সহজ কথায় কনটেন্ট রাইটিং হল কোন বিষয়ের উপর ৩০০-১০০০ বা ২০০০ বা ততোধিক শব্দের লেখা তৈরি করা যা কোথাও থেকে কপি না করে পুরোটাই নিজের ভাষায় লেখা।
যাদের ইংরেজীতে অগাধ দক্ষতা তারাই নিজেদেরকে রাইটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন উদ্দেশে আর্টিকেল লিখা হয়। ব্লগ আর্টিকেল ছাড়াও প্রোডাক্টের রিভিউ, সার্ভিসের সেলস পেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য রিসোর্স বই, ব্রশিউর, লিফলেট বা অন্যান্য প্রচারনার কাজে রাইটারদের আরটিকেল লিখার প্রয়োজন হয়।
কনটেন্ট রাইটিং কয় ধরনের হতে পারে?
বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন কনটেন্ট রাইটিংয়ের কাজ দিয়ে থাকেন। কনটেন্ট রাইটিংয়ের কাজ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে কিছু ধরন হলো;
- ওয়েবসাইট কনটেন্ট রাইটিং,
- ব্লগ রাইটিং,
- ই-বুক রাইটিং,
- নিউজ কনটেন্ট রাইটিং,
- এসইও কনটেন্ট রাইটিং,
- অ্যাফিলিয়েট কনটেন্ট রাইটিং,
- পণ্যের রিভিউ লেখা,
- পণ্যের বর্ণনা লেখা,
- একাডেমিক কনটেন্ট রাইটিং,
- সিভি রাইটিং,
- ট্রান্সক্রিপশন রাইটিং,
- গবেষণার কাজ,
- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন ও ব্রশিউর রাইটিং ইত্যাদি।
এছাড়াও রি-রাইটিং, প্রুফরিডিং ও এডিটিংয়ের কাজও করা যায়।
কনটেন্ট রাইটারদের যোগ্যতাঃ
যে কেউই কনটেন্ট রাইটার হতে পারেন। কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কোনো প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন চাকরি করতে চাইলে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হতে পারে। তবে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে বা অনলাইনে কাজ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। লেখার ভালো হাত থাকলে যেকোনো ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই ভালো কনটেন্ট রাইটার হওয়া সম্ভব। ভাষাগত দক্ষতা ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে যে কেউই স্বাধীন আয়ের উৎস হিসেবে বিভিন্ন কনটেন্ট লিখতে পারেন। তবে যেহেতু এটি একটি সৃজনশীল পেশা, সেহেতু পূর্ব অভিজ্ঞতা আর লেখার মানের উপর নির্ভর করে কাজ পাওয়া সম্ভব।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
- বাংলায় লিখতে চাইলে বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান;
- ইংরেজিতে লিখতে চাইলে ইংরেজি ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান;
- কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা করার দক্ষতা;
- সহজেই বোঝা যায়, এমনভাবে লেখার ক্ষমতা;
- লেখার ভেতর বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে পারা;
- ঠিক বানানে দ্রুত লেখার অভ্যাস।
- টেকনিক্যাল বিষয়ে লিখতে হলে সে বিষয়ের উপর দীর্ঘমেয়াদী পড়াশোনা থাকা জরুরি। যেমনঃ ইতিহাসের ছাত্র হয়ে থাকলে মেডিকেল প্রযুক্তি নিয়ে লেখা আপনার জন্য কষ্টসাধ্য হবে।
- অনলাইনে কাজ করার জন্য কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (যেমনঃ ওয়ার্ডপ্রেস) আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) নিয়ে ভালো ধারণা থাকলে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে অনেক।
পেশা হিসেবে কনটেন্ট রাইটিংঃ
কনটেন্ট রাইটিং থেকে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করা সম্ভব, তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। দেশের পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের জন্য আর্টিকেল লিখলে প্রতিটি লেখা ছাপা হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী পাওয়া যায়। অন্যদিকে বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মাধ্যমের উল্লেখযোগ্য প্রসারের কারণে প্রয়োজন পড়ছে অধিক সংখ্যক অনলাইন কনটেন্টের। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কাজ করলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একেকটি কাজ জমা দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার আয় করা সম্ভব। অনলাইনে কাজ করার ক্ষেত্রে শুরুর দিকে উচিত কম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ভালো মানের কাজ প্রদান করে সেবাগ্রহীতার থেকে ভালো মন্তব্য আদায় করে নেওয়া। তবে প্রথমেই পূর্ণ পেশা হিসেবে কনটেন্ট রাইটিংয়ের আয়ের ওপর নির্ভর না করে পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি লেখালেখির কাজটি চালিয়ে যাওয়া উচিত। অভিজ্ঞতা ও কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ভালো মানের কাজের বিপরীতে পারিশ্রমিকও বেশি পাওয়া যাবে। তখন কনটেন্ট রাইটিংকে পূর্ণ পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।
ভালো কনটেন্ট তৈরির উপায়?
কাজ পাওয়ার পর প্রথমেই বুঝে নিতে হবে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য কী উদ্দেশ্যে আপনি কনটেন্ট তৈরি করছেন। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে আপনি আপনার মেধা দিয়ে ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। যেমন-
● বিভিন্ন ভালো কনটেন্ট পড়ে একটি সামগ্রিক ধারণা তৈরি করা
● অন্যের কনটেন্ট কপি-পেস্ট না করে স্বতন্ত্র কনটেন্ট তৈরি করা
● বানান, ব্যাকরণ ও বাক্যের গঠনের দিকে খেয়াল রাখা
● নিশ্চিত না হয়ে অনুমানের ভিত্তিতে কোনো তথ্য না দেওয়া
● নির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যসূত্র উল্লেখ করা
● অনেক বড় প্যারাগ্রাফ না লিখে একেকটি বিষয়ের জন্য একেকটি ছোট প্যারাগ্রাফ তৈরি করা
● যথাযথ কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা
● নিয়মিত চর্চা করা।
Very good
কনটেন্ট রাইটিং সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম ৷ ধনবাদ আপনাকে…