অ্যাপেল ওয়াচ কি এবং এটি কেন কিনবেন?

টেকনো ইনফোঃ গত বছর খবর উঠেছিল যে অ্যাপেল পৃথিবী বিখ্যাত কয়েকজন ফিজিশিয়ান, বায়োকেমিষ্ট, ফিটনেস এক্সপার্ট আর ন্যানো টেকনোলজি ইঞ্জিনিয়ার তাদের কোম্পানিতে নিয়োগ দিয়েছেন, তখনই অনেকে আচঁ করতে পেরেছিলেন যে,অ্যাপেল এমন কোন ইলেকট্রিক ডিভাইস বানানোর কাজে হাত দিয়েছে যেটা মানুষের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে নজরদারি করবে। পৃথিবীতে মানুষের সব কাজ প্রযুক্তি করে দিলেও মানুষ যেন নিজেকে কর্মক্ষম বা যথাযথ সচল রাখার একটা তাগিদ অনুভব করে এরজন্য অ্যাপেল ওয়াচের উদ্ভব।
আইওয়াচ ঠিক তাই করবে, মানে একে এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, নিয়মিত ব্যায়াম করা আপনার অভ্যাসে না থাকলেও সে কোন না কোনভাবে আপনাকে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করিয়ে নেবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এর নাম দিয়েছে iWatch ।
# আইওয়াচ বা অ্যাপেল ওয়াচ কি জিনিস
আইওয়াচ হাত ঘড়ির মতো ছোট্ট একটা ডিভাইস যেটা কবজিতে পড়তে হয় এবং আইফোন ৫ এবং ৬ এর সবগুলো মডেলের সাথে কমপাটিবল। মানে আইফোন ৫/৬ এর সাথে এটা ডেটা সিংক করবে, আইফোনে সংযোগ থাকা ওয়াইফাই এবং জিপিএস ব্যবহার করে ইউজারকে লোকেশন সংক্রান্ত লাইভ তথ্য দিবে। এতে বেশ কিছু অ্যাপ আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকবে এবং ব্যবহারকারী চাইলে আরো অ্যাপ নিতে পারবেন। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, এই ঘড়িটির নীচে অত্যন্ত শক্তিশালি ও অত্যাধুনিক ৪ টি সুদৃশ্য ইনফ্রারেড, দৃশ্যমান এলইডি আর ফটো সেন্সর রয়েছে যা দিয়ে মানব দেহের কারডিওভাসকুলার তথ্য (যেমনঃ পাসল রেট, ইত্যাদি) সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষন করা সম্ভব।
# আইওয়াচ বা এ্যাপেল ওয়াচ দিয়ে কী কী করা যাবে
আইওয়াচের ফিচার লিষ্ট আদতে মাইল খানেক লম্বা। সাধারন কিছু কাজ যেমন গান শোনা, কল করা, এসএমএস পাঠানো বা ছবি তোলা ছাড়াও অসাধারন কিছু কাজ করা যাবে যেমনঃ আইওয়াচ দিয়ে সকালে মর্নিং ওয়াক বা গাড়ী ড্রাইভ করতে করতে ফেসবুক বা টুইটারে স্ট্যাটাস দিতে পারবেন অথচ আপনাকে জগিং ট্র্যাক বা হাইওয়ে থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও দৃষ্টি সরাতে হবে না। আইওয়াচে থাকা ফেসবুকে অ্যাপ দিয়ে Siri এর সাহায্যে আপনি দৌড়াতে দৌড়াতেই স্ট্যাটাস আপডেট করতে পারবেন বা Siri কে দিয়ে মেইল চেক করা বা মিটিং মিনিট রেডি করাসহ অন্য যে কোন কাজ করাতে পারবেন। মানে যে অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে আপনাকে এখন পকেট থেকে আইফোন বের করার কষ্টটুুক সহ্য করতে হবে না, iWatch আপনার সেটুকু কাজ করে দেবে। কবজি মুখের কাছে নিয়ে স্পেশাল এজেন্ট স্টাইলে Siri কে দিয়েই সব কাজ সারতে পারবেন, অথচ আপনার দু হাতের ১০ আংগুল থাকবে সম্পূর্ণ খালি!
সবচেয়ে বড় কথা হলো, আইওয়াচ মানুষের স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে পরিসংখ্যান রাখতে বিশেষভাবে দক্ষ। যেমনঃ হার্টবিট এবং রক্তচাপ মাপা, ক্যালোরি বার্ন হওয়া, এক্সারসাইজ টার্গেট মেইনটেন্ট করা, কত দ্রুত – কত ক্ষন ধরে – কত মাইল দৌড়ানো হচ্ছে সে হিসাব রাখা ইত্যাদি। এমনকি আপনি ঘড়ির উপর দু আঙ্গুল চেপে ধরে আপনার হার্টবিট ও ব্লাড প্রেশার অন্য অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহারকারীর সাথে তো বটেই এমনকি সামাজিক সাইটগুলোতে শেয়ারও করতে পারবেন।
# পেমেন্ট করতে পারবেন অ্যাপল ওয়াচ দিয়ে
iWatch এর রয়েছে অভূতপূর্ব চার্জিং প্রযুক্তি। সেটা হচ্ছে, wireless recharging technology বা ওয়্যারলেস ব্যাটারি রিচার্জিং প্রযুক্তি! চাজিং দ্রুততর করতে চাইলে ক্যাবলের ব্যবস্থাও আছে। তবে অ্যাপল ওয়াচের বড় সীমাবদ্ধতা হলো, একবার পূর্ণ চার্জ দিলে এর ব্যাটারির স্থায়ীত্ব হবে মাত্র ২৪ ঘন্টা মানে আপনাকে প্রতি রাতেই ঘুমুতে যাবার আগে একে চার্জিংয়ে দিয়ে ঘুমাতে হবে।
অ্যাপল ওয়াচের আরেকটি দুর্দান্ত ফিচার হলো পুরনো ভায়াব্রেশন প্রযুক্তিকে অ্যাপল মুটামুটি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এটি আপনাকে ইনকামিং কল, ম্যাসেজ এবং এ্যালার্ট দিবে ভায়াব্রেশনের মাধ্যমে, মানে কল বা ম্যাসেজ আসলে আপনি আপনার হাতে কবজিতে হালকা কাপুঁনি অনুভব করবেন। ফলে আপনার ফোনের এলার্ট আপনি ছাড়া দুনিয়ার আর কেউ টেরও পাবে না।
# আইফোনের যে মডেলগুলোর সাথে এ্যাপেল ওয়াচ চলবে
আইফোনে ৬, আইফোন ৬প্লাস, আইফোন ৫সি, আইফোন ৫এস, আইফোন ৫।