ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন প্রসঙ্গে

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিন বছর মেয়াদি এ তহবিল থেকে শুধু চলতি মূলধন (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) ঋণ দেবে ব্যাংক। গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদ হবে ৪ শতাংশ।

এর আগে গত ৫ এপ্রিল গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ক্ষুদ্র, কুটির শিল্পসহ মাঝারি শিল্পের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রধান করা হবে বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা পাবেন। এ জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ তহবিল থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রাদন করবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের ৪ শতাংশ ঋণ গ্রহীতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে।

এর পরই গত ২৩ এপ্রিল সিএমএসএমই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা ও পরিচালনার নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব উৎস থেকে এ ঋণ বিতরণের জন্য বলা হয়। এই তহবিলের থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন। এ ঋণের সুদ হার হবে ৯ শতাংশ, যার মধ্যে ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে সরকার বহন করবে। তবে এখন উভয় ক্ষেত্রে তহবিলের আকারের অর্ধেক (১০ হাজার কোটি টাকা) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

টেকনো ইনফো বিডি'র প্রিয় পাঠক: প্রযুক্তি, ব্যাংকিং ও চাকরির গুরুত্বপূর্ণ খবরের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং টেলিগ্রাম চ্যানেল এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস (কোবিড-১৯)-এর প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ/শিল্প (সিএমএসএমই) এর জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ইতিপূর্বে সার্কুলারের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনা অনুযায়ী, তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি মলূধন বাবদ ঋণ দেবে। উক্ত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নিজস্ব উৎস থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে। এ স্কিম থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণের ৫০ শতাংশ অর্থ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে। এ স্কিমের মেয়াদ হবে তিন বছর। সুদহার ৪ শতাংশ।

এ তহবিল থেকে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিতরণকৃত ঋণের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন পবে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের অর্থ পেতে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে। তহবিলের অর্থ একবছর পর থেকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর) সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। কোনো অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার বাহিরে সিএমএসএমই ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না।

এখান থেকে ঋণ নিয়ে কোনোভাবে অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে বিদ্যমান সুদেও অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ বা আদায়ের সব দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর ন্যস্ত থাকবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button